কোভিড-১৯ এর প্রভাবে বাংলাদেশের অবস্থা ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে। সরকার নির্ধারিত হসপিটাল ছাড়া সন্দেহজনক করোনা রোগী অন্যান্য হাসপাতালে ভর্তি করা যাচ্ছে না। সেই মুহূর্তে একই হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি সম্পূর্ণ আলাদাভাবে আইসোলেশন ব্যবস্থায় সন্দেহজনক করোনা রোগীদের চিকিৎসায় এক মডেল স্থাপন করল মাউন্ট এডোরা হসপিটাল, সিলেট।
চিকিৎসা সেবায় সিলেটের সু-পরিচিত মাউন্ট এডোরা হসপিটাল, এর আখালিয়া শাখায় আগামীকাল থেকে বে-সরকারি পর্যায়ে ৪০ শয্যা বিশিষ্ট করোনা ইউনিট চালু করা হচ্ছে। করোনা লক্ষণ নিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রার্থীর জন্য সম্পূর্ণ আলাদা আইসোলেশন ওয়ার্ড ও কেবিন, ভেন্টিলেটর লাইফ সাপোর্ট প্রযুক্তি সম্বলিত আইসিইউ নিয়ে ০৮/০৫/২০২০ ইং থেকে রোগীরা মাউন্ট এডোরা হসপিটাল, আখালিয়া শাখায় ভর্তি হতে পারবেন। করোনা ইউনিটটি চলমান হাসপাতালে একেবারে আলাদা ব্যবস্থাপনায় করা হয়েছে। যার ফলে সাধারণ রোগীদের কোন সমস্যা হবে না।
মাউন্ট এডোরা হসপিটাল, আখালিয়া কতৃক গৃহিত পদক্ষেপ সমূহ :
সন্দেহজনক কোভিড রোগীদের জন্য যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে:
১. প্র্রথমে ফ্লু কর্নারে রোগীর স্ক্রিনিং হওয়ার পরে সন্দেহভাজন রোগী গাড়িতে/হুইলচেয়ার/স্ট্রেচারে করে নির্দিষ্ট কড়িডোর দিয়ে লিফ্ট ( লিফ্ট নং-৩) এ সরাসরি নবম তলায় কোভিড আইসোলেশন ইউনিট এ নেয়া হবে।
২. রোগীদের অবস্থার উপর ভিত্তি করে কোভিড আইসোলেশন ইউনিটকে ২ ভাগে ভাগ করা হয়েছে
৩. যেসকল রোগীর অবস্থা গুরুতর আশঙ্কাজনক তাদের জন্য “রেড জোন” এবং যাদের অবস্থা তুলনামূলক কম আশঙ্কাজনক তাদেরকে “ইয়েলো জোন” এ চিকিৎসা দেয়া হবে।
৪. রোগীর স্বজনকে রোগী ভর্তি, বেড চার্জ, ডেইলি কস্টিং ইত্যাদি সম্পর্কে কাউন্সিলিং করার পর রোগী ভর্তি হতে চাইলে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন।
৫. সংশ্লিষ্ট ফ্লোরের মেডিকেল অফিসার, নার্স,ওর্য়াডবয় এবং ক্লিনার-কে যথাযথ নিয়মে সুরক্ষা সামগ্রী পরিধান করে সেবা প্রদান করতে হবে।
৬. রোগীর সাথে কোন আত্মীয়/সহযোগীতাকারী থাকতে পারবেন না। প্রয়োজনে রোগীর সাথে হোয়াট্সঅ্যাপ বা জুম এর মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারবেন। এক্ষেত্রে হসপিটাল ওয়াইফাই সরবারাহ করবে।
৭. রোগীর নিয়মিত খাবার, গরম পানি/চা এবং ভিটামিন সি জাতীয় খাবার ওয়ানটাইম প্যাকেট বা ওয়ানটাইম গ্লাসে সরবরাহ করা হবে
সাধারণ রোগীদের জন্য:
১. সাধারণ রোগীদের সাভাবিক ব্যবস্থায় চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া হবে।
২. ইনডোর এবং আউটডোর এ সকল প্রকার রোগী রিসিভ করা হচ্ছে।
৩. মেইন রোড থেকে নামার পর রোগীদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে হসপিটালে প্রবেশের ব্যবস্থা।
৪. হসপিটালে প্রবেশের পূর্বে সকলের হাত সাবান দিয়ে ধোয়া এবং স্যানিটাইজার দ্বারা জীবানু মুক্ত করা।
৫. হসপিটালে প্রবেশের পূর্বে সকলের স্বাস্থ্যগত প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ এবং তাপমাত্রা মেপে জ¦র, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে রোগীদের পৃথক করে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান।
৬. প্রত্যেক রোগী এবং রোগীর এটেন্ডেন্টকে হসপিটালে প্রবেশের পূর্বে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করা হচ্ছে।
৭. বহির্বিভাগে ২৪ ঘন্টা , জ্বর সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে রোগীসহ সকল প্রকার রোগী দেখা হচ্ছে।
৮. রোগী এবং চিকিৎসকের নিরাপত্তার জন্য বহির্বিভাগকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
৯. চেম্বার ডাক্তাররা সবাই একই সময়ে চেম্বার না করে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এক ফ্লোরে একটি জোনে একজন করে ডাক্তার রোগী দেখছেন।
১০. চেম্বারের সামনে রোগীদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বসার ব্যবস্থা।
১১. কিছুক্ষণ পরপর রোগীর চেয়ার সহ ফ্লোর জীবানু মুক্ত করা।
১২. ডাক্তার ও এটেন্ডেন্টদের সকলে পিপিই ব্যবহার করছে এবং প্রতি রোগী দেখার পর হাত জীবানু মুক্ত করছেন।
১৩. হসপিটালে ভর্তি রোগীদের ক্ষেত্রে দর্শনার্থী নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে স্বাভাবিক সময়ের ন্যায় সেবা প্রদান করা হচ্ছে।